গ্রামে কি ধরনের ব্যবসা করা যায় । গ্রামের ব্যবসায় আইডিয়া - Wikiguide IT

গ্রামের ব্যবসায় আইডিয়া

ভারত ও বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করে। গ্রামে শহরের মত বেশি চাকরি না থাকার কারণে গ্রামের লোকেরা কৃষিকাজ বা চাষাবাদ করে জীবিকানির্বাহ করে থাকে। কিন্তু অনেকে আছে যারা গ্রামে বসবাস করে চাষাবাদ বা কৃষিকাজে তাদের কোন আগ্রহ নেই তারা নিজেদের ব্যবসা শুরু করতে চায়। শহরের মত ব্যবসায় সুযোগ সুবিদা গ্রামে নেই।


গ্রামের ব্যবসায় আইডিয়া
গ্রামের ব্যবসায় আইডিয়া


কিন্তু এর মানে এই নয় যে গ্রামে ব্যবসা শুরু করা যাবে না। বর্তমান সময়ে গ্রামে অনেক ছোট খাটো ব্যবসা স্টার্টআপ গড়ে উঠছে। আজকাল সবাই চাচ্ছে গ্রামে ছোট খাটো ব্যবসা করে স্বাবলম্বী আর এটাই স্বাভাবিক। গ্রামে ব্যবসা শুরু করতে বেশি টাকার প্রয়োজন পড়ে না, অল্প টাকা বিনিয়োগ করে সুন্দর ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করা যায়।

আপনি যদি গ্রামে বসবাস করে থাকেন এবং গ্রামের ব্যবসায় আইডিটা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই পোস্ট টি অনেক সাহায্য করবে। আজকের এই পোস্টে সেরা কয়েকটি গ্রামে ব্যবসায় আইডিয়া সম্পর্কে ধারণা দেবো, আশা করি সেগুলো থেকে যেকোন একটি ব্যবসা আপনি শুরু করতে পারবেন।


১) আলুর চিপস তৈরি ব্যবসা


আলুর চিপস তৈরি জনপ্রিয় এবং লাভজনক একটি ব্যবসা। আলুর চিপস বিশেষ করে ছোট ছেলে-মেয়েদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। আপনি আলুর চিপস তৈরি করে কাঁচা অথবা ভাজা দুভাবেই বিক্রি করতে পারেন। সুন্দর প্যাকেট করে নিজের ব্রান্ডের নামে বিক্রি করলে তাহলে বাজারে আপনিও সফল হতে পারবেন।

২) মুড়ি ভাজার মেশিন ব্যবসা


গ্রামের বাড়িতে মুড়ি ভাজার চাহিদা অনেক। আপনি কিছু টাকা বিনিযোগ করে মুড়ি ভাজার মেশিন কিনে গ্রামের মানুষ জনের মুড়ি ভেজে দিয়ে ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়াও পাইকারি দামে গ্রামের কৃষকদের থেকে চাল কিনে মুড়ি ভেজে দোকানে বিক্রি করতে পারবেন।

৩) ফুচকার দোকান ব্যবসা


ফুচকা গ্রাম ও শহর উভয় স্থানেই জনপ্রিয় একটি খাবার। যেকোন বয়সী লোক ফুচকা খেতে পছন্দ করে। তবে কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের কাছে ফুচকা অধিক জনপ্রিয়। বাড়িতে ফুচকা বানিয়ে বড় রাস্তার মোর যেখানে বেশি মানুষ চলাফেরা করে অথবা স্কুল কলেজের সামনে বিক্রি করতে পারেন। ভালো লাভ করতে পারবেন।

৪) সাবান তৈরিব ব্যবসা


বর্তমানে গ্রামের মানুষ নিজেদের জামা কাপড় পরিষ্কার করার জন্য সোডা সাবান ও বিভিন্ন রকম সাবান ব্যবহার করে থাকে। সাবান তৈরি করতে বেশি খরচও হয় না। অল্প টাকায় সাবান তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তৈরি করে বাজার বিক্রি করলে ভালোই লাভ পাবেন।


৫) চানাচুর তৈরির ব্যবসা


চানাচুর আমাদের সবার পছন্দের খাবার। গ্রামেও চানাচুরের চাহিদা ব্যাপক। চানাচুর তৈরির ব্যবসা করতে বেশি পুঁজিরও দরকার পড়ে না। বাড়িতে চানাচুর বানিয়ে বাজারে বিক্রি করতে পারেন বাজার দখল করতে পারলে ভালো পরিমাণ আয় করতে পারবেন।


৬) গুঁড়ো মসলার ব্যবসা


গুঁড়ো মসলার ব্যবসা হতে পারেন একটি লাভজনক ব্যবসা। গ্রামে গুঁড়ো মসলার চাহিনা অনেক। একটি গুঁড়ো মসলা মেশিন কিনে গ্রামের মানুষের মসলা ও মরিচ গুঁড়ো করে আয় করতে পারবেন তা ছাড়াও বাজার থেকে পাইকারি গোটা লংকা ও হলদি কিনে গুঁড়ো করে বড় বড় দোকানে বিক্রি করে আয় করতে পারবেন।


৭) দর্জির ব্যবসা


বেঁচে থাকলে মানুষের জামা-কাপড় পড়া লাগবেই। দর্জির ব্যবসা একটি পুরাতন ব্যবসা হলেও বর্তমানেও এটি শক্ত অবস্থানে আছে। আপনি চাইলেই টেলরিং শিখে গ্রামে এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। নিজে না করতে পারলে কর্মচারী রাখুন। এ ব্যবসায় কাপড় সেলাইয়ের পাশাপাশি নতুন জামা-কাপড় তৈরি করেও আয় করতে পারেন।


৮) খামার ব্যবসা


গরু-ছাগল বা হাঁস-মুরগির খামারের ব্যবসা বর্তমানে নতুন কিছু নয়। তবে খামার ব্যবসা অনেক লাভজনক যদি একবার সঠিকভাবে শুরু করতে পারেন। এছাড়াও যদি শৌখিন হয়ে থাকেন কবুতর বা কোয়েল পাখির খামার করতে পারেন।


৯) কাঁচামালের ব্যবসা


প্রতিটি শহরের বড় বড় বাজারে সবজি গ্রামের কৃষকদের থেকেই আসে। গ্রামের কৃষকদের থেকে পাইকারি মূল্যে সবজি কিনে শহরে সাপ্লাই করে ভালো পরিমাণ আয় করতে পারেন। তবে কেনার সময় যদি ভালো খারাপ চিনে না কিনেন তাহলে ব্যবসায় লস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।


১০) ইলেক্টনিক রিপেয়ারিং


বর্তমান ঘুগে আমরা ইলেক্টনিক ছাড়া কিছু ভাবতেই পারি না শহর হোক বা গ্রাম। ফলে শহরে ও গ্রামে উভয় স্থানেই ইলেক্টনিক জিনিসের ব্যবহার বাড়ছে। যদি কাজ শিখে ইলেক্টনিকের দোকান খোলেন তাহলে লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


১১) ওষুধের দোকান ব্যবসা


বেঁচে থাকতে সবারই ওষুধের প্রয়োজন হয়। গ্রামে অনেক ধরনের দোকান থাকলেও ওষুধের দোকান বেশি একটা দেখা যায় না। তাই গ্রামের মানুষদের ওষুধ আনতে শহরে যেতে হয়। তাই গ্রামে ছোটখাটো একটা ওষুধের দোকান দিলেও সেটা ভালোই চলবে এবং ভালো পরিমাণ আয় করতে পারবেন।


১২) বেকারির ব্যবসা 


গ্রামে ও ছোটখাটো শহরে বেকারি ব্যবসা অনেক লাভজনক। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ বেকারির রুটি বিস্কুট খেয়ে থাকে। এটা একটা উৎপাদনশীল ব্যবসা হওয়ার ফলে প্রথমে ব্যবসা শুরু করার সময় ভালো পরিমাণ টাকা খরচ হলেও ভালো ভাবে ব্যবসা করতে পারলে কিছুদিনের মধ্যে টাকা উঠে আসবে।


১৩) মোবাইল রির্চাজ ও মেরামত ব্যবসা


গ্রামের মানুষের কাছেও এখন মোবাইল ফোন ছড়িয়ে গেছে মোবাইল ছাড়া তাদের এম মুহূর্ত চলে না। তাই প্রতিদিন দূরের মানুষের সাথে কথা বলতে ফোনে রির্চাজ করে থাকে। গ্রামে যদি রির্চাজের দোকান না থাকে তাহলে দিতে পারেন সাথে মোবাইল মেরামতের সুযোগ রাখলে ভালো পরিমাণ আয় করতে পারবেন।


১৪) কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার


আপনার যদি কম্পিউটার সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকে তাহলে একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার দিতে পারেন। গ্রামে একটি ট্রেনিং সেন্টার দিয়ে অন্যদের যেমন শেখার সুযোগ করে দিতে পারেন তেমনি নিজেও লাভবান হতে পারেন। প্রথমে শুরু করার সময় কম্পিউটার কেনার জন্য খরচ হলেও আস্তে আস্তে সব টাকা উঠে যাবে পড়ে মুনাফা করতে পারবেন।


১৫) লাইব্রেরি ব্যবসা


গ্রামের আরেকটি লাভজনক ব্যবসা হলো লাইব্রেরি ব্যবসা। শিক্ষার হার বাড়ার সাথে সাথে এখন গ্রামের ছেলে-মেয়েরাও পড়ালেখায় এগিয়ে পড়েছে। গ্রামে স্কুল বা কলেজের আশে পাশে একটি লাইব্রেরি দিলে ভালো চলবে সাথে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন।


১৬) ছোট রেস্তোরা ব্যবসা


আপনাদের গ্রামের যেখানো সবথেকে বেশি লোকের সমাবেশ হয় সেখানে একটি ছোট রেস্তোরা করতে পারেন। সিঙ্গারা, সমুচার পাশাপাশি পিঠা তৈরি করতে পারেন। গ্রামের মানুষ এগুলো বেশি পছন্দ করে। ভালোভাবে ব্যবসাটি শুরু করে মানুষের মন জয় করতে পারলে ভালো পরিমাণ আয় করতে পারবেন এই ব্যবসা থেকে।


১৭) ডিমের ব্যবসা


গ্রামে সব বাড়িতেই হাঁস-মুরগি মুরগি পালনের কারণে ডিম কেনার এতটা চাহিদা থাকেনা। আপনি চাইলে গ্রাম থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডিম সংগ্রহ করে সেগুলো শহরে সাপ্লাই করে ভালো পরিমাণ আয় করতে পারেন। তবে এই ব্যবসায় সফল হতে হলে শ্রম করতে হবে অনেক।


১৮) গাড়ি মেরামতের ব্যবসা


মেরামত একটি ভালো লাভজনক পেশা। গ্রামে বিক্সা, অটো ও সাইকেলেও পরিমাণ অনেক বেশি আর এগুলো নষ্ট ও হয় তাই গ্রামে গাড়ি মেরামতের একটি গ্যারেজ দিলে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন। নিজে মেরামত করতে না পারলে কর্মচারী রাখতে পারেন।


১৯) মুদি দোকানের ব্যবসা 


গ্রামের সবথেকে জনপ্রিয় ব্যবসার মধ্যে মুদি দোকানের ব্যবসা একটি। এই ব্যবসা সম্পর্কে কম-বেশি সবারই ধারণা আছে তাই সবার শেষে এটি নিয়ে আলোচনা করলাম। অল্প পুঁজি দিয়ে মুদি দোকানের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ব্যবসায় মুনাফা বাড়ার সাথে সাথে বিনিয়োগ বাড়ালে ইনকাম বাড়বে।


২০) বীজ ও সারের ব্যবসা


গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি কাজের সাথে জড়িত। মানুষ চাষাবাদ করার জন্য বীজ ও সারের প্রয়োজন পড়ে। গ্রামে ছোটখাটো দোকান দিয়ে বীজ ও সারের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এটি একটি লাভজনক ব্যবসা।


গ্রামের সেরা লাভজনক ব্যবসা কোনটি?


১) লাইব্রেরি ব্যবসা

২) বেকারি ব্যবসা

৩) ওষুধের ব্যবসা

৪) খামার ব্যবসা

৫) রেস্তোরা ব্যবসা


পোস্টে উল্লেখিত গ্রামের ব্যবসা আইডিয়া থেকে যেকোন একটি আইডিয়া থেকে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ব্যবসা করতে হলে ইচ্ছা ও কঠোর পরিশ্রম করার মনবল থাকতে হবে নাহলে সফল হতে পারবেন না।

Post a Comment

0 Comments